একটা পরীক্ষা এখনই করে ফেলুন তো… আপনার আশেপাশে যে-ই আছেন, তাঁকে জিজ্ঞেস করুন, প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের নাম শুনেছেন কিনা? বলবেন, হ্যা। এবার সেগুলোর নাম বলতে বলুন। মোটামুটি নিশ্চিত, তিনি সর্বোচ্চ ৪টার বেশি নাম বলতেই পারবেন না। যিনি ৭টাই পারলেন, তাঁকে আপনি সাধুবাদ দিতেই পারেন। …হ্যা, ঘটনা এটাই, প্রাচীনকালের সপ্তাশ্চর্যগুলোর নাম আমরা সবাই শুনেছি, কিন্তু কেউই আসলে জানি না, অথচ ভান করি, আরে জানি তো। …জানতে কি ইচ্ছে করে না, আসলে ঘটনাটা কী? কেন এগুলো সপ্তাশ্চর্য? একটু উপলব্ধি করা যায় যদি, সেটা কেমন হয়? আজ, Art People Gallery কিছু নতুন করে আঁকা ছবি প্রকাশ করায় বিষয়টা হঠাৎই মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। তাই লিখে জানানো:
পিথাগোরাসই বোধহয় সংখ্যা নিয়ে ফ্যানাটিসিজম শুরু করেছিলেন (আমি কিন্তু ‘বোধহয়’ বলেছি)। সব ফ্যানাটিসিজম আবার খারাপ না। যাহোক, সেই থেকেই বোধহয় ৭-কে শুভ সংখ্যা আখ্যা দেয়ার পায়তারা হয়েছিল (আমি কিন্তু ‘বোধহয়’ বলেছি)। সাধারণ্যের কাছে যা-ই অসম্ভব বলে মনে হতো, সেরকম কিছু, সেটা জ্ঞাত বিশ্বে ৭-এর বেশি থাকলেও মানুষ তবু ৭টি নির্বাচনের একটা রেওয়াজ ফেলে দিয়েছিল।
‘প্রাচীনকাল’ কথাটার মানে মোটামুটি, আবার বলছি, মোটামুটি, মানুষের আবিষ্কৃত প্রথম সভ্য যুগ (সেটাও খ্রিস্টপূর্ব ৩০ অব্দ) থেকে পশ্চিম রোমীয় সাম্রাজ্যের পতন অর্থাৎ মোটামুটি ৪৭৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কে বলা হয়। এই প্রাচীনকালে, তখনকার গ্রিসের হেলেনীয় সভ্যতার পর্যটকেরা প্রথম এধরণের ৭টি আশ্চর্য জিনিসের তালিকা প্রকাশ করেছিলেন। সেই তালিকায় যেসব স্থান বা স্থাপনাকে আশ্চর্যজনক মনে করা হয়েছিল, সেগুলোই আসলে ৭টি প্রাচীন আশ্চর্য স্থাপনা। আজকে আমরা সেগুলোর কাহিনীই শুনবো:
১. গিজার মহা পিরামিড
মিশরের গিজা নামক স্থানে, নীল নদের পশ্চিম পাড়ে, খ্রিস্টপূর্ব ২৫৭৫ এবং ২৪৬৭ অব্দের মাঝামাঝি সময়ে, বানানো হয়েছিল পিরামিড। চতুর্ভুজ জিনিস একটা বিন্দুর দিকে, একটা কেন্দ্রের দিকে উঠে গিয়ে যেরকম আকৃতি ধারণ করে, পিরামিডগুলো সেরকমই। পিরামিডই প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের একমাত্র নিদর্শন, যা আজও টিকে আছে। তবে বহাল তবিয়তে ঠিক না, কারণ সেগুলোর সাদা পাথরগুলো কায়রোতে বাড়ি বানানোর উপকরণ হিসেবে খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
পিরামিড বলতে আসলে একটা পিরামিড বোঝায় না, মিশরে এরকম বহু বহু পিরামিড আছে। কিন্তু গ্রেট পিরামিড বা মহা পিরামিড বলতে ফারাও (সম্রাট) খুফু’র পিরামিডকে বোঝানো হয়, এবং এটি অন্যান্য পিরামিডের মধ্যে সবচেয়ে বড়। (প্রসঙ্গত বলে রাখি, পিরামিড বলতে শুধু মিশরের পিরামিডই নয়, আমেরিকাতেও পিরামিড ছিল, সেগুলো মোটামুটি ১৮০০-১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বানানো হয়েছিল) তবে প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে থাকা খুফু’র পিরামিড, মানে মহা পিরামিডই সবচেয়ে বড় পিরামিড।
আরো জানা যাক: ইংরেজি উইকিপিডিয়া থেকে…
২. ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান
ছোটবেলা এই নামটা শুনে খুব আশ্চর্য হতাম, আসলেই কি বাতাসে লটকে আছে এরকম একটা বাগান ছিল এটা!!! কিন্তু কেউই আসলে জানতো না, কেমন ছিল এই বাগান, তাই এই ভেদ ভাঙাতে পারতেন না। আমরা কেবলই নামগুলো মুখস্ত করতাম। যাহোক, সম্ভবত ৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে দ্বিতীয় নেবুচাদনেজারের সময়ে এই বাগান বানানো হয়েছিল। এখন যেখানে ইরাক, সেযুগে সেখানে ছিল ব্যাবিলন।
এখন আর আমরা অতটা আশ্চর্য হই না, কিন্তু সেযুগে মানুষ ভূমির সংস্পর্শ ছাড়া বাগান করার চিন্তাও করতে পারতো না, আর তখনই এরকম একটা বিশাল বাগান করা হয়েছিল বলে সবার কাছে এই বাগান বা উদ্যানটি ভূমি থেকে উচ্চতায়, ভূমির থেকে আলগা বাগান বলে নামডাক হয়ে যায় আরকি। সেটাই এই ঝুলন্ত বাগান কিংবা শূণ্যোদ্যান নাম দিয়ে দেয় একে।
বিশাল এই স্থাপনার ছিল বিভিন্ন তলা, ছিল বারান্দার মতন স্থান, সেসব স্থানে ছিল ফুল, গাছপালা। কোনো কোনো তলার উচ্চতা ৮০ফুট-মতো ছিল (তুলনামূলক অনির্ভরযোগ্য সূত্র অবশ্য বলছে ৩০০ফুট)। ভাবুন তো, মোটর ছাড়া সেই তিন/চার তলা কিংবা ছয়/সাত তলা বাগানে ইউফ্রেতিস নদী থেকে পানি কিভাবে নেয়া হতো! বাগানটি এখন ধ্বংস হয়ে গেলেও পুরাতাত্ত্বিকরা এই স্থাপনার কিছু দেয়াল আবিষ্কার করতে পেরেছেন।
আরো জানা যাক: ইংরেজি উইকিপিডিয়া থেকে…
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমাদের জ্ঞান বেশিরভাগক্ষেত্রেই এই দুটো পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। এর পরেরগুলোর নাম আর আমরা জানি না, কিংবা জানলেও মনে রাখি না। আর এই সুযোগে আমাদের প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে রোমের কলোসিয়াম, গ্রিসের পার্থেনন, চীনের মহা প্রাচীর আরো কত কী – শ্রেফ গাজাখুরি বাত। বাস্তবে এগুলো সেই প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের অংশ না। 😜 তবে, একেবারে ভুলও না, যুগে যুগে আরো বহু তালিকা প্রণিত হয়েছে, হালে পানি পেয়েছে কি পায়নি, কিন্তু তার কোনো কোনোটা বিভিন্ন সময় এখানে-ওখানে উচ্চারিত হয়েছে – এই আরকি।
এমনকি এমনও হয়েছে, অনেকে জানে প্রাচীন সপ্তাশ্চর্য ৭টা নির্ধারিত হয়ে আছে, সুতরাং সেখানে আর ঢোকানো যাবে না; এরা আবার আরেক কাঠি সরেস, এরা বলেন, ও, ওটা!! আরে ওটা তো বিশা-ল! ওটা মনে হয় অষ্টম আশ্চর্য, তাই না! …মজার ব্যাপার হলো বাংলাদেশীদের নিয়ে এই কথা বললেও কথাটা আসলে সারা বিশ্বব্যাপীই হয়। সারা পৃথিবীর মানুষই কোনো না কোনো অতিকায় কিছুকে সপ্তম আশ্চর্যের ঠিক পরের ৮ নম্বর আসনে কোনো না কোনো সময় বসিয়েছেন, বসাচ্ছেন। ( দেখুন তার নমুনা^)
৩. আর্টেমিসের মন্দির
খ্রিস্টপূর্ব ৩৫৬ অব্দে বানানো ৩৪২ ফুট বাই ১৬৪ ফুট, ১২৭টা ৬০ ফুট লম্বা পিলারের উপর দাঁড়ানো প্রার্থণাঘর যা শিকার আর ফসল উৎপাদনের দেবী আর্টেমিসকে উৎসর্গ করে করা হয়েছিল। এতে বড়সড় বৃহৎ পরিসরের সব অলংকরণ ছিল। এটা যেখানে বানানো হয়েছিল, সেই ইফেসাস বর্তমানে তুরষ্কের মধ্যে পড়েছে। ২৬২ খ্রিস্টাব্দে গথ্রা (পূর্ব জার্মানের বাসিন্দা) এই মন্দিরটা ধ্বংস করে ফেলে। যে মাপটা উপরে বর্ণিত, তা পুরাতাত্ত্বিকদের গবেষিত উপাত্ত।
আরো জানা যাক: ইংরেজি উইকিপিডিয়া থেকে…
৪. অলিম্পিয়ার জিউসের মূর্তি
খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দিতে, মানে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দের কোনো এক সময়ে গ্রিসের একজন ভাস্কর, নাম তাঁর ফিডিয়াস, এটি নিপুণ হাতে তৈরি করেছিলেন। এর এতোটাই নৈপুণ্য ছিল যে, একে ফিডিয়াসের মাস্টারপিস বা সেরা কীর্তি বলা হয়ে থাকে। গ্রিসের অলিম্পিয়াতে যেখানে অলিম্পিক গেম্স অনুষ্ঠিত হত, সেখানকার মূল দেবালয়ে এটি বানানো হয়েছিল।
জিউস হলেন গ্রিক ঈশ্বরদের প্রধান, আর বিখ্যাত হারকিউলিসের পিতা। এতো উচ্চমার্গের দেবতার মূর্তি বানানোতে তাই ব্যবহার করা হয়েছিল হাতির দাঁত আর স্বর্ণ, আকারও ছিল বিশাল, পুরো ৪০ ফুট উঁচু। ধারণা করা হয়, দেবালয়টি খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দিতে কোনো এক ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গেছিল।
মূর্তিটি সেখান থেকে কনস্টানটিনোপল (বর্তমান তুরস্কের ইস্তাম্বুল)-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যা পরবর্তিতে সেখানে, অগ্নিকান্ডে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।
আরো জানা যাক: ইংরেজি উইকিপিডিয়া থেকে…
৫. হ্যালিকারনেসাসের সমাধি মন্দির
বর্তমান তুরষ্কের বোদরাম-এ, যেখানে ছিল প্রাচীন শহর কারিয়া, তারই হ্যালিকারনেসাস নামক স্থানে এক বিশালাকায় সমাধি মন্দির (মন্দির শব্দের অর্থ কিন্তু ‘ঘর’) বানানো হয়েছিল সেই ৩৫৩ থেকে ৩৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে।
রাজা মোসোলাস-এর মৃত্যুর পর তাঁর স্মরণে এটি বানিয়েছিলেন রাণী আর্তেমিসিয়া (তিনি ছিলেন তাঁর আপন বোনও, তখনকার সময়ে আপন বোনকে বিয়ে করা সামাজিকভাবে ট্যাবু ছিল না)। সেই সময়কার সেরা ভাস্করদের দিয়ে এটি বানানো হয়েছিল। আর এর জাকজমকই আসলে একে এত সুনাম দিয়েছিল।
সম্ভবত ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এটি, আর এর ধ্বংসাবশেষ লোকজন বাড়ি-ঘর বানাতে কাজে লাগিয়ে ফেলেছিল।
ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, কিন্তু আজও mausoleum শব্দটি রয়ে গেছে আমাদের অভিধানে। মোসোলিয়াম শব্দের অর্থ: জাকজমকপূর্ণ সমাধি।
আরো জানা যাক: ইংরেজি উইকিপিডিয়া থেকে…
৬. রোড্স-এর অতিকায় মূর্তি
Colossus অর্থ হলো বিশা-লাকার মূর্তি। কতটা বিশাল? গ্রিক সূর্যদেবতা হিলিয়স-কে রূপায়িত করা হয়েছিল ব্রোঞ্জ দিয়ে (আজও সূর্যকেন্দ্রীক কোনোকিছুকে helio- প্রিফিক্স বা উপসর্গ দিয়ে সূচিত করা হয়)। সেই ২৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রিসের দ্বীপ রোড্স-কে পাহারা দেয়ার জন্যই যেন দাঁড়িয়ে আছেন বিশা-ল হিলিয়স, এটা রোড্স দ্বীপের প্রবেশমুখে বানানো হয়েছিল। লম্বায় ছিল ১০৫ ফুট। আর, জনশ্রুতি অনুযায়ী এটি, দ্বিপের উপকূলে বিশাল জায়গা জুড়ে দুই পা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। খ্রিস্টপূর্ব ২২৪ অব্দেই এক ভূমিকম্পে এটি ভেঙে পড়ে।
আরো জানা যাক: ইংরেজি উইকিপিডিয়া থেকে…
৭. আলেকযান্দ্রিয়ার বাতিঘর
লাইটহাউজ বললে খুব সহজেই সবাই চেনেন, বাংলা নাম বাতিঘর। মিশরের আলেকযান্দ্রিয়াতে দ্বিতীয় টলেমির রাজত্বকালীন খ্রিস্টপূর্ব ২৮০ অব্দের দিকে একটা লাইটহাউজ বানানো হয়েছিল। এর উচ্চতা ছিল ৪৪০ ফুট লম্বা ৪০ তলা সমান।
এখনতো বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে আকাশ অবধি আলোকে ছুঁড়ে দিতে দেখি আমরা কনসার্টে। আর সেযুগে না ছিল বৈদ্যুতিক বাতি, না ছিল টর্চলাইট। তাই কুপির বড়সড় সংস্করণ বলা যায় এই বাতিঘরকে। দিনের বেলায় তো সূর্য আছে, সেই সূর্যের আলোই বড় আয়না কিংবা চকচকে কোনো তল দিয়ে ফোকাস করে দূরের সমুদ্রের দিকে ছুঁড়ে দেয়া হতো, আর তা দেখে দূর সমুদ্র থেকে নাবিকরা পথের দিশা পেতেন। আর রাতের বেলা, উপরে, বড়সড় করে আগুন জ্বালানো হতো। আর সেই আগুনের আলোই দূর থেকে দেখা যেত। এটাই ছিল বিখ্যাত সেই বিশালাকায় বাতিঘর।
৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে এটি ঝড়ে আর ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। আর ১৪শ শতাব্দির কোনো এক সময় এক ভূমিকম্পে এটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। এর ধ্বংসাবশেষ এখনও রয়েছে ভূমধ্যসাগরের তলদেশে।
কিন্তু এই বাতিঘরের কারণেই হোক, আর যে কারণেই হোক, Pharos বা বাতিঘর, আজও আলেকযান্দ্রিয়ার প্রতীক হয়ে আছে।
আরো জানা যাক: ইংরেজি উইকিপিডিয়া থেকে…
পরিশেষ
এরপরও বিভিন্ন সময়ে মানুষ বিভিন্ন আশ্চর্য নির্বাচনের চেষ্টা করেছে, সে কারণেই তালিকাটা নিয়ে আমরা গোলমাল পাকিয়ে ফেলেছি। তবে একটা কথা আজ থেকে নিশ্চিত করে নিতেই পারি আমরা, প্রাচীন সপ্তাশ্চর্য হলো এই সাতটিই – এটা সর্বজনস্বীকৃত।
২০১১ খ্রিস্টাব্দের দিকে প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনের নামে যে ভাওতা-ব্যবসা হয়ে গেছে, সেটা নিয়ে আব্দুন নূর তুষার একটা ব্লগে^ () লিখেছিলেন, তাই সেটা নিয়ে আর কথা বললাম না। আমি সেই লেখাটি ছড়িয়ে দেবার সময় একটা কথাই বলেছিলাম: “[ভোটে এগিয়ে থাকা] কক্সবাজারকে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার একটা যৌক্তিক কারণ আমাকে কেউ দেখাও।”
বর্তমান পৃথিবীর মানচিত্রে প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের অবস্থান^
যাহোক, আমরা যে প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের কথা বলছিলাম, তার সবগুলো স্থাপনাই খ্রিষ্টপূর্বীয় বিভিন্ন অব্দের, সর্বশেষটিও ২৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকের, আর আজ ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ। বুঝতে কি পারছি, অনুভব কি করতে পারছি, উপলব্ধি কি করতে পারছি, আজ থেকে (২০১৬+২৮০) ২২৯৬ বছর আগেকার এবং তারও বহু আগের স্থান, স্থাপনা আর ঐতিহাসিক বিবৃতির কথা পড়ছিলাম এতক্ষণ! একটু চোখটা বন্ধ করে ভাবুন তো, দুই হাজা-র দুই শ- বছর আগে নির্মিত হয়েছিল সপ্তম আশ্চর্য বাতিঘরটি। …আর এতো আগে আসলে কেমন ছিল ঐসব স্থাপনা, তা ঐতিহাসিকদের টুকরো টুকরো বিবরণ কিংবা গল্পকারদের গালগল্প থেকেই শুধু আমরা জানি। তাই উল্লেখিত সাল-তারিখের বড়সড় হেরফের থাকলে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। এমনকি ব্যবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান আদৌ ছিল কি না তারও কোনো প্রমাণ আজও পাওয়া যায়নি (প্রেক্ষিত ১৯৮৮)ক। …সুতরাং নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন, যে ছবিগুলো চিত্রকর Evgeny Kazantsev এঁকেছেন, শ্রেফ কল্পনা করে এঁকেছেন, দেখাতে চেয়েছেন, সেগুলো যদি আজ অবধি টিকে থাকতো, কেমন করে দেখতে যেত মানুষ সেগুলো…।
_____________________
উৎস:
তথ্য-উৎস:
- এনকার্টা এনসাইক্লোপিডিয়া ২০০৪ – মাইক্রোসফ্ট কর্পোরেশন
- উইকিপিডিয়ার, বিষয়-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নিবন্ধ
ক. নিবন্ধ “The Hanging Gardens of Babylons”^ – In The Seven Wonders of the Ancient World (গুগল বুক্স), লিখেছেন: Finkel, Irving (প্রকাশ: ১৯৮৮)। সম্পাদক: Peter Clayton and Martin Price, Routledge, নিউ ইয়র্ক। পৃষ্ঠা: ৩৮।
ছবির উৎস:
- অধিকাংশ ছবি নেয়া হয়েছে Art People Gallery’র ফেসবুক স্ট্যাটাস^ থেকে
- উইকিমিডিয়া কমন্স থেকেও দুয়েকটা ছবি নেয়া হয়েছে
এই বস্তা পঁচা সপ্তাশ্চর্য গুলো কোথায় পেলেন আপনি? প্রাচীন যখন বলছেন, তখন নতুন দেরকে প্রাচীন নাম গুলো শুনান না কেন?
না জানলে জেনে নিনঃ
1. আগ্রার তাজমহল, 2. চীনের প্রাচীর, 3. বেবীলনের শূন্যউদ্যান, 4. মস্কোর ঘন্টা, 5. টেমস নদীর তলবর্তন, 6. সাইপ্রাস দ্বীপের পিতল মুর্তি এবং 7. জেনেভার ঘড়ি।
🙂 হাহাহাহা…
আপনাকে “প্রাচীন” এবং “খ্রিস্টপূর্ব” শব্দ দুটো আরেকবার দেখার অনুরোধ করছি। “খ্রিস্টপূর্ব” মানে কিন্তু “বস্তা পঁচা”ই। 😉 :p
দারুণ গুছিয়ে লিখেছেন ভাই।
এ ব্যাপারে অবশ্য আমার ব্লগ arojani.com এ একটা পোস্ট আছে।
আশাকরি ঘুরে আসবেন ♥
যদিও আপনার মত এতোটা তথ্য দিয়ে লেখা সম্ভব হয়নি। 🙁