বলিয়াছি আদো বোল এ বাংলায়
রচিয়াছি কত গাঁথা
ভাবি নাই কভু উর্দু আমার
জাগাইবে মাথাব্যাথা
থাকিনি বসিয়া চুপ্টি করিয়া
উর্দু বোলেতে দুগাল ভরিয়া
বজ্রকণ্ঠে, জোর কদমে
হাঁকিছি বঙ্গ-বোল
আমারি ডাকেতে ওরাও জাগিলো
বাঁধিলো যে সরগোল
ঠেকায় মোদের সাধ্য যে কার
উর্দুর মাথা ভাঙিব এবার
রাজপথে নামি আমরা ক’জনা
পড়িলাম গিয়া একগাদা সেনা-
তোপের মুখেতে শেষে;
ঝরিলো রক্ত, আসিলো বাংলা
বঙ্গেতে অবশেষে
কত আরাধ্য বাংলা এ দেশে
বাঙালিরা কি তা জানে?
একুশের কথা কজনাইবা
রাখিয়াছে আজ মনে?
মনের গহীনে আসন পাতিয়া
বিদেশী বুলি সে আসনে রাখিয়া
বাঙালি সাজিয়া, রাজপথ দিয়া
ঘুরেফিরে কত জনে
বাঙালি ভোলে সে বিদেশী ছানারা
একুশেরে নাহি চেনে
একদিনেরই বাঙালি সাজি
অক্ষর গায়ে কপালে মাখি, সে
শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে, দেখি
সিক্ত যে ভাষা-বসনে
ভাষার এমন প্রেম যে বৃথা
এরা বলো কি তা জানে?
বাঙালিরা আজ ভুলিয়া গিয়াছে
একুশের গূঢ় মানে ॥
বলিতেছি কত বোল এ বাংলায়
রচিতেছি কত গাঁথা
ভাবি নাই কভু বাঙালিই মোর
জাগাইবে মাথাব্যথা ॥
কবিতাটি প্রথম লেখা শেষ করি, ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের ৯ এপ্রিল, সকাল ৯টা ৫৬মিনিটে; পরবর্তিতে আরো কিছু যোগ করি ৮ মে, সকাল ১১টা ২৫মিনিটে। অনুরোধ থাকলো, পৃথিবীর সকল ভাষাকে শ্রদ্ধা করো, জানো, সারা বছরই বাংলাকে লালন করো, নয়তো একদিনের জন্য বাঙালি সেজোনা। ভাষা আন্দোলন শুধু বুকে অক্ষর এঁকে টি-শার্ট পরার জন্য হয়নি, শুধু শহীদ মিনারে অর্থের অপচয়, সময়ের অপচয় করে ফুল দিতে গিয়ে স্বীয় প্রতিষ্ঠানের প্রচারের জন্য হয়নি, শুধু একদিন বাংলা বোল আউড়ে বাঙালি হবার জন্য হয়নি, শুধু একদিন “জীবন থেকে নেয়া” ছায়াছবি দেখার জন্য হয়নি…। যদি সম্মান জানাতেই হয়, তবে এই ভাষাকে জেনে তা দেখাও।
-মঈনুল ইসলাম