ভ্রূণের চিৎকার - অচেথন - নিশাচর

অচেথন: উপক্রমণিকা – ভ্রূণের চিৎকার

মাতৃজঠরের গহীন অন্ধকার কোণে প্রতিবিম্বহীন, আলোহীন প্রকোষ্ঠেও যে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে, বিজ্ঞানীরা তাতে আশ্চর্যের কিছুই দেখতে পান না। সেটা নাকি প্রকৃতিরই সুমধুর দান। প্রকৃতি কী? এমন প্রশ্নের বিজ্ঞান নিরুত্তর। বিজ্ঞান নিরুত্তর হবেই। কারণ বিজ্ঞানের অন্ত আছেই। বিজ্ঞানের অন্তেই দর্শনের আলোকস্তম্ভ। কিন্তু হায়! দর্শনের আলোরও সলতে জ্বলে শেষ হয়, নতুন দেদীপ্যমান শিখায় প্রদীপ্ত হয় ধর্মজ্ঞান; আর ধর্মের আলোক যেন চিরন্তনী, সলতেহীন প্রদীপ।

বিজ্ঞানের কাছে সেসব অর্থহীন বুলিমাত্র। কারণ এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের বিজ্ঞানের শুরু হয়েছে ‘একটা মহা-বিষ্ফোরণ’ দিয়ে। তার আগে…? বিজ্ঞান নিরুত্তর। আবার একটা বিষ্ফোরণ… একমাত্র আলোক উৎস নিভে যাবে… আবার আঁধার ঘনিয়ে আসবে এই পৃথিবীতে… আঁধার, সেই মাতৃজঠরেরই অনুরূপ। ঠাণ্ডায় জমে যাবে এই পৃথিবী। কিন্তু মাতৃজঠরের অন্ধকারে বসে ঠাণ্ডায় জমে যায় না প্রাণ… ভ্রূণ। সে বাড়ে… বড় হয়… স্বপ্ন দেখে… স্বপ্ন দেখায়। শেষের নয়, শুরুর স্বপ্ন।

সেই ভ্রুণটিকে লালন পালন করে কি বড় করছেন মা? নাকি প্রকৃতি? নাকি…। বিজ্ঞান দিয়ে সেসবের জবাব হয় না। বিজ্ঞান নিজেই প্রশ্নবিদ্ধ। ধর্ম স্বতঃসিদ্ধ। আর দর্শন? সে তো ধর্মের পূর্বে আলোকিত। সে আলোও নিভে যাবে, নিভে যেতে হবে। অন্ধকারের বাসিন্দা আবার অন্ধকারে মিলাবে… অন্ধকারের ভ্রূণ অন্ধকারেই র’বে। অন্ধকার থেকেই সে চিৎকার করবে… আমার প্রাণ সঞ্চার হয়েছে, আমি সজীব। ভ্রূণের সে চিৎকার কে শুনবে? শোনার মতো কি কেউ আছে? কেউ কি থাকবে…?

– মঈনুল ইসলাম

(ফেসবুকে প্রকাশ: ডিসেম্বর ৮, ২০০৯)
______________________
প্রচ্ছদের ছবি: উইকিমিডিয়া কমন্স^ থেকে, প্রদায়ক: Anatomist90।

প্রকাশ করেছেন

মঈনুল ইসলাম

An ex-Notre Damian, a Graphics, UI Design & Web Development professional, seeking truth in modern world using his interests in theology, theosophy, occult, psychology, cultures, linguistics, noetics, material science and logic.

মন্তব্য করুন