ঐসব পরিবেশবান্ধব বাড়ি আমার লাগবে না

আজ, ১৮ নভেম্বর, বন্ধু নাকিবের জন্মদিন। লেখাটি তাঁকেই উৎসর্গ করলাম।


এক মধ্যবিত্ত ব্যক্তি গেছেন এক স্থপতির কাছে। নাম তাঁর মোহাম্মদ আলাউদ্দিন খান।

আলাউদ্দিন খান: শোনেন, আমার একটা জায়গা আছে। আমার ইচ্ছা হইলো, এই জায়গায় একটা পাচতালা বাড়ি বানায়ে তার এক তালায় থাকবো, আর বাড়িভাড়ার আয় দিয়া বাকি জীবনটা কাটায়া দিব। আমি মধ্যবিত্ত মানুষ, বেশি একটা টাকা-পয়সার জোর নাই, প্রয়োজনে সামান্য কিছু ঋণ লাগলে, করতে পারি, তবে সেইটাও বেশি না। এইবার আপনে আমারে একখানা ডিযাইন ক’রে দিবেন।

স্থপতি: ঠিক আছে, বুঝতে পেরেছি। …আপনাকে আমি দুটো অপশন দিই, আপনাকে আমি একটা চারতলা বাড়ির নকশা দিব, সেটা পরিবেশবান্ধব হবে। অথবা আমি আপনাকে একটা পাঁচতলা বাড়ির নকশা দিব, যেটা পরিবেশবান্ধব।

আলাউদ্দিন: অবশ্যই আপনি পাচতালা বাড়িটাই দিবেন।

স্থপতি: কথাটা সেখানেই, আপনি যেই খরচে পাঁচতলা বাড়ি চাচ্ছেন, সেই একই খরচে আমি আপনাকে পাঁচতলা বাড়িটা দিতে পারছি না। আর আপনি যদি অতিরিক্ত খরচটা করতে পারেন, তাহলে আপনাকে আমি পাঁচতলা বাড়িটাই দিতে পারবো পরিবেশবান্ধব উপায়ে।

আলাউদ্দিন: অতিরিক্ত টাকাটা কীজন্য?

স্থপতি: যেহেতু আপনার বাড়িটা পরিবেশবান্ধব হবে, তাই।

আলাউদ্দিন: (কিছুটা উত্তেজিত) আমার পরিবেশবান্দব-টান্দব দরকার নাই, আমার পাচতালা বাড়িটাই দেন। পরিবেশবান্দব দিয়া হবেটা কী?

স্থপতি এবার হেলান ছাড়লেন। এগিয়ে বসলেন।

স্থপতি: পরিবেশবান্ধব বাড়িটা আপনার-আমার সবার জন্যই দরকার। নাহলে আমি আপনাকে বলতাম না।

আলাউদ্দিন: (বেশ খানিকটা উত্তেজিত) আমি বললামতো দরকার নাই। ঐসব আমার লাগবো না। আপনি অযথা কেন আমারে ঐটা গছায়া দিতে চাইতেছেন? তাও মাগনা হলে একটা কথা ছিল। আমার পয়সায় পরিবেশবান্দব হওয়ার আমার কোনো দরকার আমার নাই। আপনে পাচতালা বিল্ডিংয়ের ডিযাইন করেন।

স্থপতি: আপনি উত্তেজিত হবেন না। আমি আপনাকে বুঝিয়ে বলছি…

আলাউদ্দিন: (যথেষ্টই উত্তেজিত) আপনে বুঝাইয়া কইবেন কী? আপনেরতো আর ট্যাকার টেনশন নাই। আপনে তো ডিযাইন একখান গছায়া দিয়াই শ্যাষ। টাকাটাতো যাইবো আমার পকেট থেইকা।

স্থপতি বেশ অমায়িকভাবে হাসলেন। ঐ ব্যক্তির কাছে এই হাসিটা শ্রেফ একটা কসাইয়ের হাসি মনে হলো, স্বার্থ উদ্ধারের হাসি। ব্যক্তি ভাবলেন, শিওর কোনোখান থেকে পয়সা খেয়েছে এব্যাটা, নাহলে এভাবে অতিরিক্ত খরচের একটা ডিযাইন জোর করে গছিয়ে দিতে চাইছে কেন? কী স্বার্থ তার?

স্থপতি: (শান্ত আর অমায়িক কণ্ঠে) আপনি উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছেন। দয়া করে শান্ত হন। আমি আপনাকে বললাম, আপনার মুরগিটা ঘরে নিয়ে রাখুন…। আপনি রেগে গেলেন, কথাই শেষ করতে দিলেন না, বললেন, ‘কেন? আমার জায়গায় আমার মুরগি আছে, আপনার অসুবিধা কী?’ একটু পরেই মুরগির একটা বাচ্চা চিল এসে নিয়ে গেলো। তখন আপনি হায় হায় করতে থাকলেন। আমি তখন বললাম, আমি তো এজন্যই আপনার মুরগিটা ভিতরে নিতে বললাম, কারণ আকাশে একটা চিল দেখছিলাম। …দয়া করে আপনি আমার কথাটা শুনুন, তারপর আপনি সিদ্ধান্ত নিবেন।

আলাউদ্দিন: (রাগ না কমায় এখনও মেজাজ চড়া) কী বলবেন তাড়াতাড়ি বলেন, আমার সময় কম।

স্থপতি: (একজন মিশনারীর মতো শান্ত ধীর কণ্ঠ) আপনি এখনও রেগে আছেন আমার উপর। দয়া করে শান্ত হোন। আর আমাকে একটু সময় দিন। আপনি যদি আমাকে আজকে সময় দিতে না পারেন, দয়া করে কালকে আসুন সময় করে। কিন্তু অনুরোধ, একটু মনোযোগ দিয়ে শুনুন আমার কথাগুলো।

আলাউদ্দিন: (কিছুটা শান্ত হবার চেষ্টা) ঠিক আছে, বলেন, শুনতেছি।

স্থপতি: দেখুন, আপনি একজন মধ্যবিত্ত মানুষ, মধ্যবিত্তের অবস্থা আমি জানি। তারপরও আপনাকে কেন আমি পরিবেশবান্ধবের কথা বলছি? আমার এখানে বিন্দুমাত্র আর্থিক স্বার্থ নেই। আমি পরিবেশবান্ধব দিলেও আপনাকে একটা নকশা করে দিব, আপনি আমাকে ফি দিবেন, আর তা না দিলেও আপনাকে একটা নকশা করে দিব, আমাকে ঐ একই ফি দিবেন। তারপরও কেন আপনাকে এই ফালতু কথাটা বলছি? কারণটা একটু দেখতে হবে। …আচ্ছা আপনার সন্তান ক’জন?

আলাউদ্দিন: (আবার উত্তেজিত) আপনে কইতেছেন কী নিয়া, আর গেলেন কই? সন্তান দিয়া কী করবেন? আসল কথায় আসেন?

স্থপতি: দয়া করে উত্তেজিত হবেন না। আপনি আমার কাছে এসে একটা বৈলাম গাছের চারা চেয়ে বসলেন। আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা, আপনি যেখানে চারাটা লাগাবেন, তার উপরে কী আছে? আপনি রেগে গেলেন, বললেন, আমার যেখানে খুশি আমি লাগাবো, আপনাকে বলেছি চারা দিতে, আপনি দিন? আপনাকে জোর করলে আপনি বললেন, যেখানে লাগাবো ঠিক করেছি, তার বহু উপরে বৈদ্যুতিক তার গেছে। ওতো উপরে গাছ যাবে না। আমি তখন আপনাকে বললাম যে, বৈলাম গাছ হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে লম্বা গাছ। ওটা আপনার বৈদ্যুতিক তারের বারোটা বাজিয়ে দিবে। …তাই যেখানে দেখার কিছুই নেই, সেখানেও একটু অন্যভাবে তাকালে কিছু দেখার বিষয় আছে। আপনি দয়া করে বলুন, ফ্র্যাংকলি, আপনার সন্তান ক’জন?

আলাউদ্দিন: (কিছুটা ধাতস্থ হতে চেষ্টা করে…) তিনজন।

স্থপতি: ধন্যবাদ। এবার ধরুন আপনাকে বললাম, আপনার তিন সন্তানের মধ্য থেকে সবচেয়ে মায়ার একজন সন্তানকে বেছে নেবার। আপনার জন্য সেটা কষ্টসাধ্য হলেও ধরুন আপনি একজনকে বেছে নিলেন। কিংবা ধরুন আপনি আপনার ছেলের বউ, মেয়ের জামাই, কিংবা মায়ার নাতি-নাতনিদের একজনকে বেছে নিলেন। আর আপনি এবার একটা নতুন গাড়ি কিনেছেন, আপনার খুব ইচ্ছা আপনি সেই গাড়ি নিয়ে মনের সুখে খুব দ্রুত গতিতে ড্রাইভ করে রাস্তা দিয়ে যাবেন। কেন যাবেন? কারণ আপনি নতুন গাড়িতে করে আপনার ইচ্ছাটুকু পূরণ করতে চান। এবার ধরুন আপনি প্রচন্ড গতিতে গাড়িটা চালাচ্ছেন, আর তখনই দেখতে পেলেন, ঐ-যে দূরে রাস্তা পার হচ্ছে আপনারই সেই মায়ার মানুষটি: সন্তান, নাতি-নাতনি যে-ই হোক। আর এটা নিশ্চিত, আপনার গাড়ি যে গতিতে আছে, ঠিকই ঐ মায়ার মানুষটি আপনার গাড়ির নিচে চাপা পড়বে। এখন আপনার করণীয় আছে দুটো: এক, মায়ার মানুষটিকে পথ থেকে সরিয়ে দিবেন, আর দুই, আপনার গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখবেন। কিন্তু আপনি তো গাড়িতে বসে আছেন, রাস্তা থেকে তাকে সরাতে পারবেন না। তাহলে আপনার করণীয় এখন একটাই, গাড়ির গতিটা নিয়ন্ত্রণ করা।

আপনাকে সেই কথাটিই বলতে চাচ্ছি। এখন আমরা আমাদের ইচ্ছা পূরণ করার ক্ষেত্রে ঐসব মায়ার মানুষগুলোর কোনো ক্ষতি দেখতে না পেলেও আমাদেরই কারণে আসলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যে জায়গায় আপনি বাড়ি করতে চাচ্ছেন, ঐ জায়গায় বাড়ি না করলে সেখানে গাছ থাকতো, তাও না থাকলে ঘাস থাকতো। যখন আপনি বাড়ি করে ফেলছেন, তখন সেখানে সিমেন্ট আর কংক্রিট দিয়ে ভরে ফেলছেন। আপনি যেখানে বাড়ি করবেন, সেখানে এখন আলো-বাতাস চলাচল করতে পারছে, কোনো বিদ্যুৎ দেয়া লাগছে না, পানি দেয়া লাগছে না; কিন্তু আপনি বাড়ি করার পর সেখান দিয়ে বাতাস যাবে না, আলো যাবে না, বিদ্যুৎ লাগবে, পানির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারের প্রোডাকশন কম, আপনার বাড়ির জন্য পাঁচতলা পরিমাণ বিদ্যুৎ-পানি সরকার কোত্থেকে দিবে? কিন্তু এটাও কথা যে, আপনি বাড়ি না করলে থাকবেন কোথায়? ঐ পাঁচতলা বাড়ির চারতলা জুড়ে যারা থাকবেন, আপনি বাড়ি না করলে তারা থাকবে কোথায়? তাই আপনার বাড়িও করতে হবে, আর এইসব সমস্যার সমাধানও বিবেচনা করতে হবে; গাড়িও চালাতে হবে, আর রাস্তার উপর আপনার মায়ার মানুষকে বাঁচাতে হবে।

আলাউদ্দিন: (চেহারা শান্ত হলেও ভিতরটা উত্তেজিত) সবই বুঝলাম। কিন্তু এতো সব দায়িত্ব আমার ঘাড়ে কেন? আর মানুষ নাই? যারা কাড়ি কাড়ি টাকায় বাড়ি বানায়, যারা মার্বেল পাথরের প্রাসাদ বানায়, গুলশান-বনানীতে থাকে, তাদেরকে গিয়ে বলেন? শুনেন, এইসব দায়িত্ব সরকারের। আমার না।

স্থপতি: ভালো কথা বলেছেন। আচ্ছা, বাচ্চাটা মারা যাবে আমার, আর আমি বলবো, গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব ট্রাফিক পুলিশের? বসে থাকবো? নাকি সাথে সাথে আমার বাচ্চাকে বাঁচাতে আমার করণীয়টুকু করবো? …ধরুন, আমি বাড়ি বানানোর সময় পরিবেশবান্ধব বাড়ি বানাবো না, বলবো, ওটা আমার দায়িত্ব না; এই দায়িত্ব ওর। ঠিক তেমনি, আপনি আমার পাশের বাড়িতে থাকেন, আপনিও ভাববেন, দায়িত্বটা আপনার না, আমার। তার পাশের লোকটিও ভাববে, তার না, আরেকজনের। এভাবে এই পুরো এলাকাটার মানুষই ভাববে দায়িত্বটা আরেক এলাকার। পুরো বাংলাদেশের মানুষ ভাববে, দায়িত্বটা আমেরিকা-ইউরোপের। আমেরিকা-ইউরোপ ভাববে ভিনগ্রহের প্রাণীর। কেউই আর বানাতে উদ্যোগ নিবে না। কেউ সেই গাড়িটা থামাবে না। মারা যাবে আমার বাচ্চা। …তাই আমাকে আমার করণীয়টুকু করতে হবে। আমার বাড়িটা আমাকে পরিবেশবান্ধব করে বানাতে হবে। তারপর যখন পাশের বাড়ির লোকটিকে আমি বলবো, তখন সেও বানাতে উদ্যোগী হবে।

একজন আর্কিটেক্ট হিসেবে আমার টাকা পাবার দরকার। কী দরকার আপনার সাথে এতক্ষণ ধরে প্যাঁচাল চালিয়ে নেবার? কারণ একেবারে স্বার্থ নেই বললেও আমারও একটা স্বার্থ আছে। আর তা হলো আমার নিজের বাড়ি করার সামর্থ নেই। অথচ আমার সন্তানও রাস্তায় আছে, এই পৃথিবীতে আছে। তাই আপনি যাতে গাড়িটা নিয়ন্ত্রণে চালান, সেটা যদি আমি আপনাকে না বলি, তাহলে আপনিও আমার বাচ্চাকে পিষে ফেলবেন।

তাই এই এতো বড় একটা স্বার্থ রক্ষার জন্য যদি আমার একটা তলা কম বানাতে হয়, কিংবা আরো একটু বেশি ঋণ করতেই হয়, আরো একটু বেশি খরচ করতেই হয়, আমার তা মাথা পেতে নেয়া উচিত। যেমন আমি আপনার সাথে যতক্ষণ ধরে কথা বলছি ততক্ষণ আরো দুজন ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলতে পারতাম। আরো দুটো প্রজেক্ট অতিরিক্ত পেতাম। কিন্তু ঐ বড় স্বার্থের কারণে আমি আমার এই আপাতত বড় স্বার্থটাতে ছাড় দিয়েছি। আমি আপনাকে বুঝিয়ে বলছি, যেন আপনিও তা করেন।

আরেকটা কথা মনে রাখবেন, আল্লাহ শিখিয়েছেন, তোমার করণীয়টুকু তুমি করো, [করার যোগ্যতাটুকু (তাওফিক) আমার থেকে চেয়ে নাও,] আর যতটুকু তুমি করতে পারছো না, ততটুকু আমি পুষিয়ে দিব (১৩ সূরা রা’দ: ১১)। আপনি যখন আপনার করণীয়টুকু করবেন, আর তার মাধ্যমে আপনার সন্তানের শান্তি চাইবেন, আশা করি আপনার সন্তানকে আপনার ঐ কাজের কারণে আল্লাহ কষ্ট দিবেন না। কারণ প্রত্যেকের জন্য আল্লাহ যতটুকু দরকার, ততটুকু নির্ধারিত করে রেখেছেন। আমি আপনি যখন আমার জন্য নির্ধারিতটুকু থেকে অতিরিক্ত অর্জন করতে চাইব, স্বাভাবিকভাবে আরেকজনের জন্য তখন টান পড়বে। সেকথাও তিনি বলে দিয়েছেন (৮ সূরা আনফাল: ৫৩)। মানে হলো, আমিই আমার সন্তানের বাতাসটা কেড়ে নিচ্ছি, আমিই আমার সন্তানের থাকার জায়গায় বন্যা ডেকে আনছি, অনেকটা আমার সন্তানের খেলনা তার হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়ার মতো।


গাছগাছালিপূর্ণ পরিবেশবান্ধব চারতলা বাড়ি
পরিবেশবান্ধব বাড়ি (thehindubusinessline.com)

স্থপতি এখন বেশ খানিকটা বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। তারপরও শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য তিনি ভোরে নিয়মিত হাঁটেন। আজকে তিনি হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে এসেছেন। আশেপাশে অনেক বড় বড় বিল্ডিং, দম বন্ধ হবার জোগাড়। বিশুদ্ধ বাতাস পাওয়াই দায়। এমন সময় তিনি একটা বাড়ির পাশ কাটাচ্ছিলেন, আর আশ্চর্য হয়ে দেখলেন এই বিল্ডিংটা সবুজ। গাছ-গাছালিতে ভরপুর একটা শহুরে বাড়ি। তিনি চিনতে পারলেন এই নকশাটা তাঁরই করে দেয়া। কার বাড়ি সেটা মনে পড়ছে না।

হ্যা, যারা এতক্ষণ কাহিনীটি শুনছিলেন তাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, আপাতদৃশ্যে ভিলেন মনে হওয়া আলাউদ্দিন সাহেব কিন্তু যথেষ্ট অমায়িক ছিলেন, এতশত নীতিকথার পর তিনি মেনে নিয়েছিলেন তাঁরও কিছু করার আছে। কিন্তু তাঁরতো সে সামর্থ ছিল না। তিনি চাইলেও পারেননি অতিরিক্ত কিছু টাকা জোগাড় করতে। তাই শেষ পর্যন্ত তিনি ছাড় দিয়েছিলেন; স্থপতিকে বলেছিলেন আপনি চারতলাই করুন, পরিবেশবান্দবভাবে করুন। আমার গরীবের পক্ষে এরচেয়ে বেশি খরচ করা সম্ভব না।

আলাউদ্দিন সাহেবের সেই ছাড় বা ত্যাগটুকু ছিল তখনকার সময়ে তার জন্য অনেক বড়। কিন্তু আজকে এই খরার যুগে সেটা আরো আরো বড়। তিনি সত্যিই এই এলাকায় একটুকু প্রাণের সঞ্চার করে যেতে পেরেছিলেন। কিন্তু আমাকেও যে আরেকজন আলাউদ্দিন সাহেব হয়ে এরকম ছাড় দিতে হবে, আজকেই, এই-এখনই দিতে হবে, সে খেয়াল কি আমার আছে?

– মঈনুল ইসলাম
১৭ নভেম্বর ২০০৯; ঢাকা, বিকেল ৪:৩০

৬ thoughts on “ঐসব পরিবেশবান্ধব বাড়ি আমার লাগবে না

  1. ভালো লিখেছেন। এরকম আলাউদ্দিন ক্লায়েন্ট দিনেদিনে কমে যাচ্ছে কারন ঐরকম স্থপতি’র সংখ্যা বর্তমান প্রতিযোগিতার বাজারে খুবই নগন্য।

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেইল প্রকাশ করা হবে না

আপনি এই HTML ট্যাগ এবং মার্কআপগুলো ব্যবহার করতে পারেন: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>

*